বিশেষজ্ঞরা স্তনের গঠনভেদে সাধারণত ৮ থেকে ১০ ধরনের স্তন চিহ্নিত করেছেন। এগুলো কোনো অসুস্থতা নির্দেশ করে না — বরং, এটি প্রাকৃতিক শারীরিক বৈচিত্র্য।
১. গোলাকার (Round)
বৈশিষ্ট্য:
- দুই স্তনের আকৃতি প্রায় সমান
- উপর এবং নিচের দিক সমানভাবে পূর্ণ
- তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ দেখতে
উদাহরণ:
যেমনটা আমরা অনেক মডেল বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ছবিতে দেখি।
২. পূর্ব-পশ্চিমে ঝুঁকে থাকা (East-West)
বৈশিষ্ট্য:
- স্তনের দুইটি অংশ বাইরের দিকে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে থাকে
- স্তনবৃন্ত (nipple) দুই পাশে ইশারা করে
উদাহরণ:
কখনও ব্রা ছাড়া থাকলে এই ধরনের স্তনের ফাঁক বেশি দেখা যায়।
৩. অসম (Asymmetrical)
বৈশিষ্ট্য:
- এক স্তন আরেকটির চেয়ে বড় বা ছোট
- অনেক নারীর ক্ষেত্রেই একদম সমান আকার থাকে না
উদাহরণ:
বাঁ দিকের স্তন ডান দিকের চেয়ে কিছুটা বড় — এটি স্বাভাবিক।
৪. টিয়ারড্রপ (Teardrop)
বৈশিষ্ট্য:
- উপরের অংশ অপেক্ষাকৃত পাতলা
- নিচের অংশ ভরাট, টিয়ারড্রপের মতো দেখতে
উদাহরণ:
স্বাভাবিকভাবে আকর্ষণীয় ও প্রাকৃতিকভাবে ভারী স্তনের ধরন।
৫. ঘন্টার মতো বা বেল শেপ (Bell Shape)
বৈশিষ্ট্য:
- উপর থেকে সরু ও নিচের দিকে ভারী
- সাধারণত বড় আকৃতির স্তনে দেখা যায়
উদাহরণ:
গর্ভাবস্থা বা বয়সের সাথে এমন গঠন হতে পারে।
৬. সাইড সেট (Side Set)
বৈশিষ্ট্য:
- স্তনের মাঝে ফাঁক বেশি থাকে
- স্তনের বেজ বাইরের দিকে ঝুঁকে থাকে
উদাহরণ:
ক্লিভেজ কম দেখা যায়, বিশেষ ব্রা পরলে ভালো ফিট হয়।
৭. স্লেন্ডার (Slender)
বৈশিষ্ট্য:
- সরু ও লম্বাটে স্তন
- স্তনবৃন্ত নিচের দিকে ঝুঁকে থাকতে পারে
উদাহরণ:
অনেকটা পাতলা শরীরের নারীদের মধ্যে দেখা যায়।
৮. কনুই ড্রপ বা রিলাক্সড (Relaxed)
বৈশিষ্ট্য:
- স্তনের টিস্যু তুলনামূলকভাবে কম শক্ত
- স্তনবৃন্ত নিচের দিকে ঝুঁকে থাকে
উদাহরণ:
বয়স, ওজন কমে যাওয়া, অথবা সন্তান জন্মদানের পর এমন হতে পারে।
৯. অ্যাথলেটিক (Athletic)
বৈশিষ্ট্য:
- স্তনের ঘনত্ব কম
- চওড়া বেস এবং টাইট টিস্যু
উদাহরণ:
অ্যাথলেট বা নিয়মিত ব্যায়াম করা নারীদের স্তন এই রকম হতে পারে।
১০. কনইক্যাল (Conical)
বৈশিষ্ট্য:
- স্তনের আকৃতি শঙ্কু বা চুঁচালো (কন)-এর মতো
- তুলনামূলকভাবে ছোট স্তনে বেশি দেখা যায়
উদাহরণ:
যুবতীদের মধ্যে অনেক সময় এ গঠন দেখা যায়, বিশেষ করে যারা বয়ঃসন্ধিতে আছেন।
স্তনের আকার ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- আকার যাই হোক, এটা স্বাস্থ্যের মানদণ্ড নয়
- স্তনের আকৃতি পরিবর্তন হতে পারে বয়স, হরমোন, গর্ভাবস্থা বা ওজন বাড়া-কমার কারণে
- নিয়মিত ব্রা না পরলে স্তনের অবস্থানে কিছু পরিবর্তন হতে পারে, তবে এটা মারাত্মক কিছু নয়
স্তনের স্বাভাবিক যত্ন:
- নিয়মিত পরিষ্কার রাখা
- সঠিক ফিটিং ব্রা পরা
- ব্যথা বা চাকা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
- নিজে নিজে স্তনে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, তা মাঝে মাঝে পরীক্ষা করা
উপসংহার:
নারীর স্তনের আকার, গঠন ও ধরন প্রকৃতিগতভাবে ভিন্ন হতে পারে — এবং প্রতিটিই স্বাভাবিক ও সুন্দর। এগুলোর প্রতিটা ধরনই নারীর স্বতন্ত্রতা এবং স্বাভাবিক সৌন্দর্যের অংশ। নিজের শরীরকে বুঝে, ভালোবেসে এবং যত্ন নিয়ে দেখা — আত্মবিশ্বাসের বড় অংশ।