যৌন মিলনের সময় আমার নুনু / পেনিস erection / খাড়া হয় না | কি করব

যৌন মিলনের সময় আমার নুনু / পেনিস erection / খাড়া হয় না | কি করব


আপনার প্রশ্নটা খুবই সংবেদনশীল এবং বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া। পেনিসে ইরেকশন না হওয়া, অর্থাৎ যৌন মিলনের সময় ইরেকটাইল ডিসফাংশন (Erectile Dysfunction - ED) বা যৌন অক্ষমতা হতে পারে। এটি বেশ সাধারণ সমস্যা এবং বেশিরভাগ পুরুষ এক বা একাধিক সময়ে এই সমস্যার সম্মুখীন হন। এই সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক, তবে এতে সহজ কিছু সমাধান এবং পদক্ষেপ রয়েছে যা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।


১. শারীরিক বা মানসিক সমস্যা?

ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) সাধারণত শারীরিক, মানসিক বা উভয় কারণের জন্য হতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ হল:


শারীরিক কারণ:

  • হরমোনের অসামঞ্জস্যতা: টেস্টোস্টেরন এর মত হরমোনের অভাব ইরেকশন সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • রক্তপ্রবাহ সমস্যা: হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যাগুলি রক্তপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা ইরেকশন হতে বাধা দেয়।
  • ওজন বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত মদ্যপান: শরীরের অতিরিক্ত মেদ এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইরেকশন সমস্যায় সাহায্য করতে পারে।


মানসিক কারণ:

  • চিন্তা এবং উদ্বেগ: কাজ, সম্পর্ক বা অন্যান্য জীবনের চাপগুলো ইরেকশন সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • আত্মবিশ্বাসের অভাব: আপনার শরীর বা পারফরম্যান্স নিয়ে উদ্বেগ, সেক্স সম্পর্কে অনিশ্চয়তা বা আত্মবিশ্বাসের অভাব ইরেকশন সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • ডিপ্রেশন বা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: মানসিক চাপ বা ডিপ্রেশনও ইরেকশন সমস্যা তৈরি করতে পারে।


২. ইরেকটাইল ডিসফাংশন মোকাবিলার উপায়


২.১. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

একটি সুষ্ঠু জীবনযাপন আপনার যৌন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সাধারণ সুপারিশ:

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: শরীরের রক্তপ্রবাহের উন্নতি, মাংসপেশীর শক্তি বৃদ্ধি এবং মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়াম সাহায্য করে।
  • সুস্থ ডায়েট: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রক্তপ্রবাহের উন্নতি করতে সহায়ক। প্রচুর ফল, শাকসবজি, ফাইবার এবং প্রোটিন গ্রহণ করুন। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং অতিরিক্ত মদ্যপান পরিহার করুন।
  • ওজন কমানো: অতিরিক্ত মেদ বা স্থূলতা ইরেকটাইল ডিসফাংশনকে বাড়াতে পারে। সুস্থ ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।


২.২. মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমানো

আপনার যদি মানসিক চাপ বা উদ্বেগ থাকে, তবে সেগুলি কমানোর কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন:

  • মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস প্রশ্বাস: মানসিক শান্তির জন্য মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের অনুশীলন সাহায্য করতে পারে।
  • থেরাপি বা কাউন্সেলিং: একজন সেক্সোলজিস্ট বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া আপনার উদ্বেগ বা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • খোলামেলা আলোচনা: আপনার সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করে তাদের অনুভূতি এবং চাহিদা বুঝতে চেষ্টা করুন। কখনও কখনও, উদ্বেগের কারণ থাকে যে, সঙ্গী খুশি না হতে পারে, যা আরো চাপ সৃষ্টি করে।


২.৩. চিকিৎসা পদ্ধতি

যদি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করেও সমস্যা সমাধান না হয়, তবে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে:

  • ঔষধ গ্রহণ: সিলডেনাফিল (Viagra), টাডালাফিল (Cialis), ভারডেনাফিল (Levitra) ইত্যাদি এমন কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলি পুরুষের ইরেকটাইল ডিসফাংশনকে সহায়তা করতে পারে। তবে, এসব ঔষধ গ্রহণ করার আগে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
  • পেনিস পাম্প বা ইনজেকশন: কিছু পেনিস পাম্প বা ইনজেকশন রয়েছে, যেগুলি পেনিসে রক্তপ্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে। এটি একটি অস্থায়ী সমাধান, তবে কিছু পুরুষের জন্য কার্যকর হতে পারে।
  • হরমোন থেরাপি: যদি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা (যেমন টেস্টোস্টেরনের অভাব) এর জন্য ইরেকশন সমস্যা হয়ে থাকে, তবে হরমোন থেরাপি হতে পারে।


২.৪. সেক্স থেরাপি

আপনি যদি যৌন সমস্যার ক্ষেত্রে উদ্বিগ্ন হন, তবে একজন সেক্সোলজিস্ট বা থেরাপিস্ট আপনার সমস্যাগুলি চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারেন। তারা যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আপনার উদ্বেগ দূর করতে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করতে পারেন।


২.৫. জীবনযাত্রার পরিবর্তন

আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার দিকে মনোযোগ দিন। সঠিক ঘুম, খাবারের সময়সূচি, শারীরিক ব্যায়াম এবং সামাজিক সম্পর্কের প্রতি মনোযোগ দেওয়া যৌন স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।


৩. সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা

আপনার সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন। কখনও কখনও, যৌন অক্ষমতার কারণে সঙ্গী নিজেও উদ্বিগ্ন হতে পারে, এবং সৎ ও খোলামেলা আলোচনা তাদের সহানুভূতি এবং বোঝাপড়া বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।


ইরেকটাইল ডিসফাংশন একটি সাধারণ সমস্যা, এবং এটি প্রায় প্রতিটি পুরুষের জীবনে এক বা একাধিক বার হতে পারে। তবে, একে গুরুতর সমস্যা মনে না করে, এর মোকাবিলার জন্য আপনি উপরের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারেন। আপনার যদি এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে সঠিক চিকিৎসা বা থেরাপি গ্রহণ করা যায়।

যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, একজন সেক্সোলজিস্ট বা ইউরোলজিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।